২০২৪ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে - ঈদুল আযহা ২০২৪
২০২৪ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে ? এ বিষয়টি আমাদের হয়তো কারো কাছেই অজানা নয় । আবার যে সবাই জানবে বিষয়টা এমন নয় । আমরা মুসলিম । আল্লাহ প্রদত্ত আমরা দুটি উৎসব পেয়েছি- একটি হচ্ছে ঈদুল ফিতর অন্যটি হলো ঈদুল আযহা । তবে এই দুইটি উৎসবের মধ্যে ঈদুল আযহা অন্যতম ।
যদি আপনি বাংলাদেশের একজন বাসিন্দা হয়ে থাকেন এবং আপনি ২০২৪ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে ? তা যদি না জেনে থাকেন, তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । আজকের এই আর্টিকেলে ঈদুল আযহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ।
ভূমিকা
ঈদ অর্থ আনন্দ, খুশি । মুসলমানদের জন্য ঈদ আনন্দ বয়ে নিয়ে আসে। মুসলমানদের দুটি উৎসব আল্লাহ প্রদত্ত নির্ধারিত । তার মধ্যে একটি হল ঈদুল ফিতর, অন্যটি ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ । দুইটি উৎসবের মধ্যে ঈদুল ফিতর প্রথমে আসে তারপরে আসে ঈদুল আযহা । চলুন জেনে নেই, ২০২৪ সালে কোরবানির ঈদ কত তারিখে ?
২০২৪ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে
২০২৪ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে ? আপনি যদি এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে এসে থাকেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন । মুসলমানদের জন্য কোরবানির ঈদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নিকটবর্তী হওয়া যায় । আমরা কোরবানির ঈদ পালন করি ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদের দুই মাস দশ দিন পর । কোরবানির ঈদে পশু জবাই এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার আদেশ পালন করতে পারি । কোরবানি করা আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত । তাই চলুন জেনে নেই, ২০২৪ সালে কোরবানির ঈদ কত তারিখে ?
মুসলমানদের জন্য বছরে দুটি ধর্মীয় উৎসব পালন করার বিধান রয়েছে । তার মধ্যে একটি হলো ঈদুল ফিতর অন্যটি হলো ঈদুল আযহা । ঈদুল ফিতর উদযাপনের ২ মাস ১০ দিন পর কুরবানীর ঈদ পালিত হয় । আমরা জানি, জিলহজ মাসের ১০ তারিক সকাল থেকে থেকে ১২ তারিখ সন্ধা পর্যন্ত এই তিন দিন ঈদুল আযহা পালন করা হয় । ভৌগলিক কারণে পৃথিবীর প্রতিটা দেশে একই দিনে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা পালিত না।
বাংলাদেশের ঈদুল আযহা পালন করা হয় সাধারণত সৌদি আরব, কাতা, ওমান, আরব আমিরাতে সকল দেশে যেদিন পালিত হবে তার পরের দিন । তবে সৌদির চাঁদ দেখা কমিটি কোরবানির ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানিয়েছেন, জুন মাসের ১৬ তারিখ অর্থাৎ হিজরী বছর বর্ষপঞ্জি ১০ জিলহজ্জ । তবে মুসলমানরা এই দুটি উৎসব পালন করে চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে । যদি সৌদিতে ১৬ জুন ঈদুল আযহা পালিত হয় তাহলে পরের দিন অর্থাৎ ১৭ জুন বাংলাদেশে ঈদুল আযহা পালিত হবে ।
কোরবানির ইতিহাস - কোরবানি কিভাবে শুরু হল
২০২৪ সালে কোরবানির ঈদ কত তারিখে ? তা আমরা উপরের আলোচনা থেকে ইতিমধ্যে জেনে গেছি। আমরা মুসলিম। আমাদের সকলেরই জানা উচিত কোরবানি কিভাবে শুরু হলো ? বা কোরবানি করার ইতিহাসটা কি ? তো আপনারা যারা না জানেন কোনো সমস্যা নেই । আমি আপনাদের কোরবানির ইতিহাস বলছি । মুসলমানদের জাতির পিতা হলেন হযরত ইব্রাহিম (আঃ) । হযরত ইব্রাহিম (আঃ) একদিন স্বপ্ন দেখলেন তার প্রিয় বস্তুকে আল্লাহর রাস্তায় কোরবানি করতে । তো হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর প্রিয় বস্তুটি ছিল তার প্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ)।
তখন হযরত ইব্রাহিম (আঃ)তার প্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ) কে কুরবানী করার সিদ্ধান্ত নেন । কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তার উপর সন্তুষ্ট হয়ে হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর পরিবর্তে পশু জবাই হয়ে যায় । এভাবেই কোরবানি পালন শুরু হয় । তারই ধারাবাহিকতায় আজও আমরা নির্দিষ্ট দিনে কোরবানি করে থাকি । মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি এবং জান্নাত লাভের আশায় নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট ব্যক্তির নির্দিষ্ট পশু কোরবানি করতে হয় । মহান আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভের আশায় পশু জবাই করাকে ইসলামে কুরবানী বলা হয় ।
আল্লাহর কাছে কোরবানির অর্থ কি
২০২৪ সালে কোরবানি ঈদ কত তারিখে ? তা জানার পর আমরা অনেকে হয়তো কোরবানি করার জন্য পশু কিনব । তবে আপনি কি জানেন, আল্লাহর কাছে কোরবানির অর্থ কি ? আমরা কোরবানি করি মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ও জান্নাত লাভের আশায় । মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে কোরবানির পশুর গোশত, রক্ত, হাড্ডি এর কােনো কিছুই পৌছে না ।
মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে যেটা পৌঁছায় সেটা হল আমাদের তাকওয়া । এজন্য আল্লাহ তায়ালা বিধান করেছেন যাদের সামর্থ্য আছে তারা কোরবানি করো । যেন গরিব-দুঃখীও সেদিন গোশত খেতে পারে । কোরবানি করার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহ তায়ালার নিকটবর্তী হতে পারে এবং আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে । আল্লাহ তায়ালার কাছে কোরবানির অর্থ হলো আমাদের তাকওয়া তার নিকট পেশ করা ।
কুরবানীর পশু কেনার নিয়ম
মুসলমানদের দুটি ধর্মীয় উৎসব আছে তার মধ্যে অন্যতম হলো ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ । কোরবানির ঈদের অর্থই হলো আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট পশু জবাই করা । ২০২৪ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে ? তা জানার সঙ্গে সঙ্গে আমরা কোরবানির পশু কেনা শুরু করে দিব । তবে যে কোনো পশু দিয়ে কোরবানি করলেই হবে না । আমাদের দেখে শুনে ভালো পশু কোরবানি করতে হবে ।
অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে, পশুর যেন পর্যাপ্ত বয়স হয় । পশুর কোন ত্রুটি থাকলে কোরবানি আদায় হবে না । যেমন, কানে শুনতে পায় না, কান কাটা, চোখ কানা, ল্যাংড়া ইত্যাদি । আমাদের এমন পশু কোরবানি দিতে হবে যার কোন ত্রুটি নেই । তাহলে পরিপূর্ণভাবে আমাদের কোরবানি আদায় হয়ে যাবে । সব থেকে ভালো হয় কোরবানির পরশুটি নিজে লালন পালন করা।
কয়দিন পর্যন্ত কোরবানি করা যায়
কয়দিন পর্যন্ত কোরবানি করা যায় ? বা কোরবানির সময়সীমা কতদিন ? এসব মাসআলা আমরা অনেকেই জানিনা । আমরা মুসলিম হিসেবে আমাদের এসব মাসআলা জেনে রাখা উচিত । তো আপনি যদি না জেনে থাকেন, কয়দিন পর্যন্ত কোরবানি করা যায় ? তাহলে চলুন, আমি আপনাকে বলছি । কুরবানী করা যায় কোরবানির ঈদের দিন অর্থাৎ জিলহজ মাসের ১০ তারিখ, ১১ তারিখ এবং ১২ তারিখ এই তিন দিন কোরবানি করা যায় ।
আবার অনেক আলেমের মতে, চার দিন পর্যন্ত কোরবানি করা যায় অর্থাৎ কোরবানির ঈদের দিন জিলহজ মাসের ১০ তারিখ এবং এরপর আরও তিন দিন অর্থাৎ জিলহজ মাসের ১১ তারিখ, ১২ তারিখ ও ১৩ তারিখ ।তবে কোরবানির ঈদের নামাজ পরপরই কোরবানি করা বেশি উত্তম । এতে কারো কোনো সন্দেহ বা দ্বিমত নেই । এ ব্যাপারে সারা বিশ্বের মুসলমানগন একমত । আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কোরবানির ঈদের দিনে নামাজ পরপরই কোরবানি করতেন, দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিনে তিনি কোরবানি করতেন না । একেবারে শুরুতেই কুরবানী করে ফেলা উত্তম ।
কোন কোন পশু দিয়ে কোরবানি করা যায়
ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ মানে হল পশু কোরবানি করতে হবে । যে কোন পশু দিয়ে কোরবানি করা যায় না । কোরবানির পশুর কিছু শর্ত আছে । কোরবানির ওপর ভিত্তি করে পশু দুই রকমের হয়ে থাকে । বড় পশু এবং ছোট পশু ।
বড় পশু কোরবানি করার নিয়ম
কোরবানির বড় পশুর মধ্যে রয়েছে উট, গরু, মহিষ । এগুলো দিয়ে কুরবানী করা যায় । তবে অনেক আলেম-উলামার মতে মহিষ দিয়ে কোরবানি করা যায় না । তবে একান্ত অসুবিধা না হলে গরু দিয়ে কোরবানি দেওয়াই ভালো । কোরবানির পশু অবশ্যই গৃহপালিত হতে হবে । কোরবানির পশুর যে বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে সেটি হল, পশুর বয়স ।
কোরবানি দেওয়া উটের বয়স হতে হবে ৫ বছর, গরুর বয়স হতে হবে ২ বছর । তাহলে এসব পশু কোরবানি দেওয়ার জন্য উপযুক্ত । এই সকল বিষয় দেখে শুনে কোরবানির পশু নির্ধারণ করতে হবে । তাহলেই কোরবানি পরিপূর্ণ ভাবে আদায় হবে ।
ছোট পশু কোরবানি করার নিয়ম
কোরবানির ছোট পশুর মধ্যে রয়েছে তিনটা পশু - দুম্বা, ছাগল এবং ভেড়া । এছাড়া অন্যান্য গৃহপালিত পশু পাখি যেমন হাঁস মুরগি দিয়ে কোরবানি করা যাবে না । ছোট পশুর ক্ষেত্রেও লক্ষ্য রাখতে হবে, যেন কোরবানির পশু প্রাপ্তবয়স্ক হয় । ছাগল, দুম্বা ও ভেড়ার বয়স হতে হবে ১ বছর । তবে দুম্বা এবং ভেড়ার ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম । দুম্বা এবং ভেড়ার বয়স যদি ৭ থেকে ৮ মাস হয় এবং এদের দেখতে যদি ১ বছরের মতো মনে হয় তাহলে এসব দিয়ে কোরবানি করা যাবে ।
কিন্তু ছাগলের পরিপূর্ণ এক বছর হতে হবে অন্যথায় কোরবানি দেওয়া যাবে না । আমরা আগেই বলেছি, শুধু গৃহপালিত পশু দিয়েই কোরবানি করা যায় । কেননা হরিণ একটি হালাল প্রাণী, তবে এটি দিয়ে কোরবানি করা যাবে না । কারণ হরিণ গৃহপালিত পশু নয় । এটি বনের প্রাণী । তাই আমাদের সকল বিষয় লক্ষ্য রেখে নির্দিষ্ট পশু কোরবানি করতে হবে ।
আমাদের শেষ কথা
২০২৪ সালের কোরবানির কত তারিখে ? এই বিষয়টি আপনি ইতিমধ্যে উপরোক্ত আর্টিকেল পড়ে জানতে পেরেছেন । আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনার অনেক ভালো লেগেছে কেননা এতে কোরবানি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ।
মনোযোগ সহকারে এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ । আপনার যদি আমার আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাদের পরিচিতদের সাথে এই আর্টিকেলটি শেয়ার করে দিন । আর এ ধরনের তথ্যমূলক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যদি নিয়মিত পড়তে চান, তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন ।
ইকো আসিবের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url