জাতীয় চা দিবস কবে ২০২৪

প্রিয় পাঠক,আপনি কি জানেন আজকে কি দিবস ? যদি না জেনে থাকেন তাহলে কোনো সমস্যা নেই । আমি আপনাবক বলছি আজকে কি দিবস। আজকে জাতীয় চা দিবস । ২০২১ সাল থেকে জাতীয় চা দিবস পালিত হয়ে আসছে । যদিও আগে ভিন্ন দিনে চা দিবস পালিত হতো, তবে এখন ৪ জুন জাতীয় চা দিবস পালন করা হয় ।

আমাদের জীবনের সাথে চা খুবই অতপ্রতভাবে জড়িত । চা না খেলে সকালটা কেমন শুরুই হতে চায় না । তাই সকালবেলা উঠেই আমরা অনেকেই চায়ের কাপে চুমুক দেই । প্রতিটা চায়ের চুমুকে রয়েছে রিফ্রেশমেন্ট ।

ভূমিকা

চীনে সর্বপ্রথম চা উৎপাদিত হয়েছিল । সেই থেকে বিশ্বের প্রতিটা দেশেে আস্তে আস্তে চায়ের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পরে । চা ছোট থেকে বড় সবাই পান করতে পছন্দ করে। বর্তমান বিশ্বে বাহারি রকমের চা পাওয়া যায় চলুন । সেই সব চা খেতে সত্যিই খুব সুস্বাদু । প্রিয় পাঠক, চলুন জেনে নেই চায়ের ইতিহাস কি, চা কিভাবে এলো, চা খাওয়ার উপকারিতা, চা খাওয়ার ক্ষতিকর দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে । আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হবেন ।

জাতীয় চা দিবস কবে ২০২৪

আজকে ৪ জুন, মঙ্গলবার দেশে চতুর্থ বারের মতো উদযাপিত হতে যাচ্ছে জাতীয় চা দিবস । বাংলাদেশ স্বাধীনতার 50 বছরের ইতিহাসে সর্বপ্রথম ২০২১ সালের ৪ জন জাতীয় চা দিবস পালন করা হয় । জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম বাঙালি হিসেবে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করেন ১৯৫৭ সালের ৪ জুন । 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চা বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকাকালে এবং দেশ স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের চা শিল্পে তার অবদানকে চির স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতিবছর ৪ জুন চা দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় । ১৯৫৭ সালের ৪ জুন থেকে ১৯৫৮ সালের ২৩ শে অক্টোবর পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন । তার এই অসামান্য অবদান এবং চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদানের তারিখটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ৪ জুন জাতীয় চা দিবস ঘোষণা করা হয় ।

গরম চা দিবস বা হট টি ডে ২০২৪

চা আমাদের সকলেরই একটি প্রিয় পানীয় । চা না থাকলে হয়তো আমাদের সকালটাই মিষ্টি হতো না । আজ সকালে আপনি ধোঁয়া উঠা এক কাপ গরম চা পান করছেন তো ? যদি পান না করে থাকেন তাহলে এক্ষুনি এক কাপ ধোঁয়া উঠা গরম চায়ের কাপে চুমুক দিন । কেননা আপনি হয়তো জানেন না, আজকে কি দিবস ? আমি আপনাকে বলছি আজকে কি দিবস । আজকে ১২ জানুয়ারি মানে হলো গরম চা দিবস বা হট টি ডে ।

যুক্তরাষ্ট্রের চা কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫০ সালে । যুক্তরাষ্ট্রের সেই চা কাউন্সেলিটি ২০১৬ সালে গরম চা দিবস বা হট টি ডে প্রচলন করেন । তারই ধারাবাহিকতায় আজ ১২ই জানুয়ারি সারা বিশ্বে গরম চা দিবস বা হট ডে পালন করছে ।

চা এর ইতিহাস

ইতিহাস থেকে এটাই পাওয়া যায়, চা সর্বপ্রথম উৎপাদিত হয়েছে চীনে ।তাই চা উৎপাদনের দেশ হিসেবে চীনকে ধরা হয় । চায়ের কিভাবে উৎপত্তি হলো এর একটি ইতিহাস আছে কিন্তু বলা মুশকিল এই ইতিহাস বা গল্পটা কতটুকু সত্য । 

চলুন জেনে নেই সেই ইতিহাস, প্রচলিত আছে একজন চীনা সম্রাট 5 হাজার বছর আগে একটি গাছের নিচে গরম পানির পাত্র নিয়ে বসে ছিলো । তিনি হঠাৎ লক্ষ্য করে দেখলেন আম পাশের কিছু শুকনো পাতার সেই পাত্রে এসে পড়লো এবং মুহূর্তেই পানির রং পরিবর্তন হতে শুরু করলো । পরে সম্রাট সেই পানীয় পান করে মুগ্ধ হলেন । এভাবেই আস্তে আস্তে চা মানুষের প্রিয় হয়ে উঠলো ।

কিভাবে আমাদের দেশে চা এলো

সালটা ছিল ১৮৪০। যখন ইউরোপীয়ানরা সর্বপ্রথম এই উপমহাদেশে ব্যবসা করতে এসেছিল । সেই ইউরোপীয় ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রামে একটি ক্লাব তৈরি করে সেখানে থাকতে শুরু করলো এবং সেই ক্লাবের আশ পাশে কলকাতা বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে নিয়ে আসা চিনা চা গাছ রোপন করে । এভাবেই আমাদের দেশে চা এর উৎপত্তি হলো । আমাদের দেশে সর্বপ্রথম ১৮৪৩ সালের চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীরে চা তৈরি এবং পান করা হয়েছিল ।

চা খাওয়ার উপকারিতা

চা আমাদের সকলের প্রিয় একটি পানীয় । আমরা সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করে প্রথমেই চায়ের কাপ হাতে নিয়ে একটা চুমুক দেই । সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনটা ফ্রেশ এবং চাঙ্গা হয়ে যায় । এছাড়াও দুপুরে কাজের ফাঁকে, বিকালে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় চা পান করে থাকি । চা আমাদের সকল অস্থিরতা দূর করে দেয় । 

চা আমাদের বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে । চায়ের মধ্যে পুষ্টিগুণ সামান্য পরিমাণ থাকলেও এতে পলিফেনলস, ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং ক্যাটেচিন নামক উপাদান থাকার কারণে ফ্রি রেডিক্যালস তৈরিতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষের বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে । চায়ে ২৫% এর বেশি পলিফেনলসের উপস্থিতি থাকায় রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে । এছাড়া আদা দিয়ে চা পান করলে ঠান্ডা কাশি ভালো হয় ।

চা খাওয়ার ক্ষতিকর দিক

কোন কিছুই বেশি খাওয়া উচিত নয়। চায়ের ক্ষেত্রেও ঠিক একই কথা । কেননা অতিরিক্ত চা পান করলে শরীরে নানা রকম জটিলতা তৈরি হতে পারে।
  • অতিরিক্ত চা পান করলে আমাদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি প্রোটেস্ট ক্যান্সার হতে পারে ।
  • চায়ের মধ্যে থাকে থিওফাইলিন নামক একটি রাসায়নিক উপাদান যা শরীরের ডিহাইড্রেশন তৈরি করে হজমে নানা রকম সমস্যা তৈরি করে এবং একই সাথে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো জটিলতা দেখা দেয় ।
  • অতিরিক্ত চা খাওয়ার ফলে ঘুমের মারাত্মক ক্ষতি হয়, সহজে ঘুম আসে না ।
  • অতিরিক্ত চা পান করার ফলে অস্থিরতা দেখা দিবে ।
  • গর্ভবতী মায়েদের চা পান থেকে দূরে থাকা উচিত । কেননা চায়ে উপস্থিত ক্যাফেইন ভ্রুণের বিকাশে বাধা প্রদান করবে ।
  • যারা অতিরিক্ত চা পান করেন তাদের প্রোটেস্ট ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা সব থেকে বেশি ।

লেখক এর মন্তব্য

আমরা উপরোক্ত আলোচনা থেকে বিভিন্ন বিষয় দেখলাম । চায়ের উৎপত্তির ঘটনাটি আসলেই অনেক মজাদার ছিল । ৪ জুন আমাদের দেশে জাতীয় চা দিবস পালন করা হয় । আপনার আর্টিকেলটি পড়ে কেমন লেগেছে অবশ্যই জানাবেন । আর যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করে দিবেন ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইকো আসিবের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url